ক্লাস-12 প্রবন্ধ রচনা PDF
🔹 Class 12 Semester 4 Probondho Rachana
🔵 প্রদত্ত সূত্র ও তথ্য অবলম্বনে একটি প্রবন্ধ রচনা করো।বেগম রোকেয়া
জন্ম - ৯ ডিসেম্বর, ১৮৮০, বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে
পিতা - জহীবুদ্দিন আবু আলী হায়দার সাবের
মাতা - রাহাতুন্নেসা চৌধুরী
সমসাময়িক সমাজ - পর্দাপ্রথা প্রচলিত। খানদানি ফারসি বা উর্দু ভাষা শেখা যাবে। বাংলা বা ইংরেজি নয়।পারিবারিক বৃত্তি ও শিক্ষালাভ-রক্ষনশীল পরিবার। দিদি করিমুন্নেসা এবং দাদা ইব্রাহিম সাবেরের প্রেরণা ও সহযোগিতায় বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষা।
বিবাহ - ১৬ বছর বয়সে, পাত্র সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। ওড়িশা কণিকা স্টেটের ম্যানেজার।
বিবাহিত জীবন - স্বামীর কাছে ইংরেজি শিক্ষা। লিখলেন Sultana's Dream, লেখিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ। দুই কন্যা। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে সাখাওয়াতের মৃত্যু।
সাহিত্যকীর্তি - পিপাসা, মতিচুর, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী।
উল্লেখযোগ্য কীর্তি - সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল (১৯১১), 'নিখিলবঙ্গ মুসলিম মহিলা সমিতি' বা 'আঞ্জুমন-ই-খাওয়াতীনে ইসলাম' (১৯১৬)।
মৃত্যু - ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর। [HS Model Question, WBCHSE)
উত্তর :
বেগম রোকেয়া
(ক) ভূমিকা :
বাংলা সমাজে নারীজাগরণের ইতিহাসে বেগম রোকেয়া এক অনন্য প্রতীক। তিনি ছিলেন একাধারে সমাজসংস্কারক, সাহিত্যিক এবং নারীশিক্ষার পথিকৃৎ। তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থার মধ্যেও তিনি নারীর মুক্তি ও শিক্ষার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর জীবন ছিল এক সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের প্রতিমূর্তি।
(খ) প্রাথমিক পরিচিতি :
১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের ১ ডিসেম্বর বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন আবু আলী হায়দার সাবের এবং মাতা রাহাতুন্নেসা চৌধুরী। রোকেয়া ছিলেন জন্মসূত্রে হিন্দুস্থানি, কারণ তাঁর মাতৃভাষা ছিল উর্দু। সে সময় অবিভক্ত বাংলার সমাজে হিন্দু ও মুসলিম নারীদের জীবন ছিল পর্দা-নিয়মে আবদ্ধ। যদিও বিদ্যাসাগর ও রামমোহনের প্রচেষ্টায় হিন্দু মেয়েরা ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো পেতে শুরু করে, মুসলিম সমাজ তখনও ছিল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।
(গ) শিক্ষাজীবন :
রোকেয়ার পিতা ছিলেন আরবি ও ফারসিতে সুপণ্ডিত ব্যক্তি, কিন্তু কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, মেয়েদের বাংলা বা ইংরেজি শিক্ষা অনুচিত। তাই রোকেয়ার লেখাপড়া ছিল নিষিদ্ধ। তবে তিনি গোপনে বড়ভাই ইব্রাহিম ও বড়বোন করিমুন্নেসার কাছ থেকে বাংলা, ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিখতেন। গভীর রাতে মোমের আলোয় তাঁর সেই অধ্যবসায় তাঁকে একদিন আলোকিত নারীতে পরিণত করে।
(ঘ) কর্মজীবন :
মাত্র ষোলো বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। স্বামী ছিলেন শিক্ষিত ও উদারমনস্ক। তিনি রোকেয়াকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য শেখান এবং লেখালেখিতে উৎসাহ দেন। তাঁর প্রেরণাতেই রোকেয়া লেখিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। প্রথম ইংরেজি রচনা Sultana’s Dream পত্রিকায় প্রকাশিত হয় এবং তা রোকেয়াকে নতুন পরিচিতি দেয়।
(ঙ) সাহিত্যসৃষ্টি ও অবদান :
রোকেয়ার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মতিচুর (দুই খণ্ড), পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী ও সুলতানার স্বপ্ন। তাঁর সাহিত্য নারীর স্বাধীনতা, শিক্ষা, এবং সমাজসংস্কারের দৃঢ় বার্তা বহন করে। তিনি বিশ্বাস করতেন, নারীশিক্ষা ছাড়া সমাজের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। আবদুল কাদির যথার্থই বলেছেন, “রোকেয়ার সাহিত্য উদ্দেশ্যমূলক হলেও শিল্পমানেও রসোত্তীর্ণ।”
(চ) সমাজসংস্কারমূলক কর্ম :
স্বামীর মৃত্যুর পর রোকেয়া ১৯১১ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল। পরবর্তীতে ১৯১৬ সালে গড়ে তোলেন আঞ্জুমন-ই-খাওয়াতীনে ইসলাম। এর মাধ্যমে তিনি মুসলিম নারীদের শিক্ষিত, স্বাবলম্বী ও সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আজীবন কাজ করেছেন।
(ছ) সম্মান ও স্মৃতিচিহ্ন :
নারীশিক্ষায় তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে রাখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর পৈতৃক ভিটেতে স্থাপিত হয়েছে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র—যা তাঁর অমর কীর্তির সাক্ষ্য বহন করছে।
(জ) উপসংহার :
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর মাত্র তিপ্পান্ন বছর বয়সে রোকেয়ার জীবনাবসান ঘটে। কিন্তু তাঁর সাহিত্য, শিক্ষা আন্দোলন ও সমাজসংস্কারের কাজ আজও অমর। তিনি শুধু একজন সাহিত্যিক নন, ছিলেন নারীজীবনের মুক্তির অগ্রদূত। বেগম রোকেয়া চিরকাল বাংলার নারীজাগরণের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন।
🔵 প্রদত্ত সূত্র ও তথ্য অবলম্বনে একটি প্রবন্ধ রচনা করো।
সত্যজিৎ রায়
জন্ম - ২ মে, ১৯২১। কলকাতা।পিতা - বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়।
মাতা - সুপ্রভা রায়।
পারিবারিক ঐতিহ্য - সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরি তাঁর পিতামহ। নিকট আত্মীয়-লীলা মজুমদার।
শিক্ষাজীবন - বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক। বিশ্বভারতীর (শান্তিনিকেতন) কলাভবনে শিল্প বিষয়ে পাঠগ্রহণ।
কর্মজীবন - প্রথম জীবনে বিজ্ঞাপন সংস্থায় যোগদান। পুস্তকের প্রচ্ছদ অঙ্কনে নব্য ধারার প্রবর্তন।
বাংলা চলচ্চিত্রে অবদান - পথের পাঁচালী ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ। বিশিষ্ট ছবি-অপরাজিত, চারুলতা, জলসাঘর। ছোটোদের সিনেমা ও অন্যান্য বহু ছবি।
সাহিত্যকর্ম - ফেলুদার কাহিনি, প্রোফেসার শঙ্কুর কাহিনি এবং অজস্র ছোটোগল্প, প্রবন্ধ।
পুরস্কার - বিভিন্ন স্তরের জাতীয় পুরস্কার, দাদাসাহেব ফালকে, লিজিয়ন অফ অনার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
মৃত্যু - ২৩ এপ্রিল, ১৯৯২।
উত্তর :
সত্যজিৎ রায়
(ক) ভূমিকা :
রবীন্দ্রনাথের পর বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির জগতে সর্বাধিক বহুমুখী প্রতিভা হিসেবে পরিচিত সত্যজিৎ রায়। সাহিত্য, চিত্রকলা থেকে চলচ্চিত্র—সব ক্ষেত্রেই সত্যজিৎ রায়ের প্রতিভার ছাপ স্পষ্টভাবে বিদ্যমান।
(খ) ব্যক্তিগত জীবন ও শিক্ষা :
১৯২১ সালের ২ মে উত্তর কলকাতার প্রসিদ্ধ বায়চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর পিতা ছিলেন বাংলাদেশের আরেক খ্যাতিমান প্রতিভা সুকুমার রায়, এবং পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন শিশুসাহিত্য ও সামাজিক-ধর্মীয় আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। তাঁর মায়ের নাম ছিল সুপ্রভা দেবী। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে অর্থনীতি বিষয়ে ভর্তি হন। পরবর্তীকালে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পচর্চার পাঠ গ্রহণ করেন।
(গ) কর্মজীবন :
শান্তিনিকেতনের শিক্ষা অসম্পূর্ণ রেখেই সত্যজিৎ রায় কলকাতায় ফিরে এসে ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থা ডি. জে. কিমারে ‘জুনিয়র ভিজুয়ালাইজার’ পদে মাত্র ৮০ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি প্রসিদ্ধ ‘সিগনেট প্রেস’-এর সঙ্গে যুক্ত হন এবং প্রচ্ছদ শিল্পকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেন।
(ঘ) চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ :
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে সত্যজিৎ চিদানন্দ দাশগুপ্ত প্রমুখের সঙ্গে কলকাতা ফিল্ম সোসাইটি স্থাপন করেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র 'পথের পাঁচালী'-যা বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমার গতিপথকেই পালটে দেয়। এই সিনেমার ফটোগ্রাফি এক নতুন চিত্রভাষার জন্ম দিল। ১৯৫৭-র ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হল 'পথের পাঁচালী'। এরপর 'অপরাজিত' ও 'অপুর সংসার' নির্মাণ করে ট্রিলজিকে সম্পূর্ণতা দেন সত্যজিৎ রায়। এর মধ্যেই তৈরি করেন 'পরশপাথর' নিম্নমধ্যবিত্তের স্বপ্নপূরণের ফ্যান্টাসি এবং 'জলসাঘর'-পতনোন্মুখ সামন্ততন্ত্রের এক নিঃস্ব জমিদারের কাহিনি। বিষয়বৈচিত্র্যে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা অনবদ্য। রবীন্দ্রনাথের 'নষ্টনীড়' নিয়ে তিনি যেমন বানিয়েছেন 'চারুলতা', আবার সমাজের নানা আবর্তকেও তুলে এনেছেন 'সীমানন্দ', 'কাপুরুষ ও মহাপুরুষ', 'জন-অরণ্য' এইসব সিনেমায়। 'পুণী গাইন বাঘা বাইন', 'হীরক রাজার দেশে' এইসব সিনেমায় আপাত হাসির আড়ালে গভীরতর সমাজভাবনাকে অনবদ্য শিল্পকৌশলে রূপ দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়। আবার 'সোনার কেল্লা', 'জয়বাবা ফেলুনাথ'-এর মতো গোয়েন্দা কাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্রও তিনি তৈরি করেছেন। শেষপর্বে 'আগন্তুক' বা 'শাখাপ্রশাখায়' এক নতুন জীবনদর্শনের খোঁজ করেছেন সত্যজিৎ রায়, দেখিয়েছেন প্রজন্মের ব্যবধান।
(ঙ) সাহিত্যকর্ম :
সত্যজিৎ বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি করেছেন দুটি অত্যন্ত জনপ্রিয় চরিত্র— ফেলুদা ও প্রোফেসর শঙ্কু। এছাড়াও নিজের শৈশব জীবনের কাহিনি তিনি লিখেছেন ‘যখন ছোট ছিলাম’ গ্রন্থে। চলচ্চিত্র সম্পর্কিত তাঁর প্রবন্ধ সংকলনের মধ্যে রয়েছে— ‘Our Films, Their Films’, ‘বিষয় চলচ্চিত্র’ প্রভৃতি।
(চ) পুরস্কার ও সম্পাদনা :
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সত্যজিৎ রায়কে সাম্মানিক ডক্টরেট প্রদান করে তাঁকে সম্মানিত করে। ১৯৮৫ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাঁকে সে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘লিজিয়ন দ্য অনার’-এ ভূষিত করে। ভারত সরকারও তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘ভারতরত্ন’ প্রদান করেছে।
(ছ) মৃত্যু :
১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ২৩ এপ্রিল সত্যজিৎ রায় প্রয়াত হন।
(জ) উপসংহার :
সত্যজিৎ রায় বিশ্বমঞ্চে ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃত। বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার আকিরা কুরোসাওয়া তাঁকে নিয়ে বলেছেন— "সত্যজিতের চলচ্চিত্র না দেখা আর পৃথিবীতে বাস করে চন্দ্রসূর্য না দেখা একই কথা।"
🔵 প্রদত্ত সূত্র ও তথ্য অবলম্বনে একটি প্রবন্ধ রচনা করো।
বিবেকানন্দ
জন্ম - ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২ জানুয়ারি, কলকাতার সিমলাপাড়ায়।
পিতা - বিখ্যাত আইনজীবী বিশ্বনাথ দত্ত।
মাতা - ভুবনেশ্বরী দেবী।
শিক্ষাজীবন - মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
রামকৃয়ের সান্নিধ্য - দক্ষিণেশ্বরে রামকৃজের সান্নিধ্যে এসে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে রামকুঞ্জের দেহত্যাগের পর বরানগরে রামকৃয় মঠ স্থাপন।
কর্মজীবন - ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে শিকাগো ধর্মমহাসভায় যোগদানের জন্য আমেরিকা যাত্রা। ইংল্যান্ড ভ্রমণ, ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন। রামকৃষ্ণের ভক্ত ও শিষ্যদের নিয়ে 'রামকৃষ্ণ মিশন' প্রতিষ্ঠা।
উল্লেখযোগ্য রচনা - পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত।
মৃত্যু - ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুলাই।
উত্তর :
স্বামী বিবেকানন্দ
(ক) ভূমিকা :
১৮৯৩ সালের শিকাগো ধর্মসভায় গেরুয়া পোশাকধারী বাঙালি সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তাঁর উদাত্ত বক্তৃতায় ভারত ও হিন্দুধর্মের গৌরবকে নতুনভাবে বিশ্ববাসী চেনেছিল। তাঁর ভাষণ শুধু ধর্মপ্রচার নয়, বরং ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার একটি মহৎ প্রচেষ্টা ছিল।
(খ) প্রাথমিক পরিচিতি :
১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি উত্তর কলকাতার সিমলাপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা বিশ্বনাথ দত্ত, পেশায় আইনজীবি, এবং মা ভুবনেশ্বরী দেবী। জন্মের সময় তাঁর নাম রাখা হয় নরেন্দ্রনাথ দত্ত, এবং ডাকনাম ছিল বিলে। ছোটবেলা থেকেই তাঁর মানসিক উন্নতি ও জ্ঞানার্জনের প্রতি প্রবল আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়।
(গ) শিক্ষাজীবন :
মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন এবং স্কটিশচার্চ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। শিক্ষাজীবন তাঁকে চিন্তাশীল ও মানবিক করে গড়ে তোলে। তিনি ধর্ম, সাহিত্য ও দর্শনের প্রতি গভীর অনুরাগী ছিলেন এবং শিক্ষাজীবনেই সমাজ ও মানবতার প্রতি দায়িত্ববোধ জন্মায়।
(ঘ) রামকৃষ্ণের সান্নিধ্য :
রামকৃষ্ণের সান্নিধ্য বিবেকানন্দের মানসজগতে বিপুল প্রভাব ফেলে। মানবসেবা তাঁর জীবনের মূল ব্রত হয়ে ওঠে। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পরে ১৮৮৬ সালে বরানগরে রামকৃষ্ণ মঠ প্রতিষ্ঠা করেন।
(ঙ) কর্মজীবন :
অজস্র প্রতিকূলতার মধ্যেও ১৮৯৩ সালে শিকাগোর বিশ্বধর্ম সভায় ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করেন। দেশে ফিরে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও দরিদ্র ও বিপন্ন মানুষদের সেবা করে চলেছে। তিনি ধর্মচেতনা ও মানবসেবার মাধ্যমে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
(চ) উল্লেখযোগ্য রচনা :
বিবেকানন্দ নিজের চিন্তাভাবনা লিখেছেন ‘পরিব্রাজক’, ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য’, ‘ভাববার কথা’, ‘বর্তমান ভারত’ প্রভৃতি গ্রন্থে। এই রচনায় ধর্মচেতনা, ইতিহাস ও সমাজবোধের চমৎকার মিল লক্ষ্য করা যায়। তাঁর লেখনী বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে এবং ধর্মচিন্তাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছে।
(ছ) মৃত্যু :
১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুলাই তিনি প্রয়াত হন। তবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মাধ্যমে তাঁর ভাবধারা আজও সক্রিয়। তিনি শুধু জীবদ্দশায় নয়, মৃত্যুর পরেও সমাজ ও ধর্মচেতনার পথপ্রদর্শক হিসেবে রয়ে গেছেন।
(জ) উপসংহার :
বিবেকানন্দের জীবন ও বাণী, উদার ধর্মভাবনা এবং মানবতার আদর্শ বাঙালি জাতির জীবনে চিরস্থায়ী বাতিঘর হয়ে রয়েছে। তিনি মানবসেবাকে ঈশ্বরসেবার সঙ্গে মিলিয়েছেন এবং যুবশক্তির জাগরণকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
🔹 লেখকের শেষ মন্তব্য :
আরো অনেকগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা আছে আমাদের সাজেশন ই-বুক(PDF) গুলিতে। সুতরাং দ্বাদশ শ্রেণীর চতুর্থ সেমিস্টার সাজেশন ই-বুকগুলি (PDF) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইটের উপরের Menu অপশনে ক্লিক করুন। এই ই-বুক(PDF)গুলিতে নতুন সিলেবাসের প্রতিটি অধ্যায় থেকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে প্রশ্ন উত্তরগুলি উপস্থাপন করা হয়েছে।
File Details :
PDF Name : ক্লাস-12 প্রবন্ধ রচনা PDF
Size : 1.1 mb
No. of Pages : 2
Download Link : Coming Soon
আরো পড়ুন | প্রশ্নোত্তর |
---|---|
4. 'কেন এল না' কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
1. Class 12 প্রবন্ধ রচনা PDF | Click here |
2. তিমির হননের গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
3. হারুন সালেমের মাসি গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF | Click here |
WB Semester Team
📞 & 💬 9883566115